মনে পড়ে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে ‘ সিনেমার বিখ্যাত গান ‘তুঝে দেখা তো ইয়ে জানা সানাম’ গানের দৃশ্যের কথা? সরষে ফুলের পাশে শাহরুখ আর কাজলের প্রেমপর্ব।
শুধু এই সিনেমা নয়, বলিউডের আরও বিখ্যাত সিনেমার গানের দৃশ্যতে দেখা যায়, ফুলের বাগানের পাশ দিয়ে ছুটে চলেছে নায়ক নায়িকা।
এরকম দৃশ্য কী বাস্তব জীবনে অনুভব করতে চান? তাহলে অবশ্যই ঘুরে আসুন ক্ষীরাই থেকে।
ক্ষীরাই সেটা আবার কোথায়? তাই মনে হচ্ছে না।
আজ এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে জানতে পারবেন,
- ক্ষিরাই এর নাম কেন ক্ষিরাই?
- ক্ষিরাই কীভাবে যাবেন
- ক্ষিরাই আসার উপযুক্ত সময়
- ক্ষীরাই এর আকর্ষনীয় জিনিস কী
- ক্ষীরাই নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য
আসুন দেখে নেওয়া যাক ক্ষীরাই এর বিস্তারিত বিবরণ।
ক্ষিরাই এর নাম কেন ক্ষিরাই?
আমরা এতদিন শুনেছি উপত্যকা মানেই পাহাড়, পর্বত। কিন্তু এ উপত্যকা ফুলের উপত্যকা।
আপনাদের মনে একটা প্রশ্ন আসতেই পারে, কেন এর নাম ক্ষিরাই?
এই ক্ষীরাই এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে একদিকে বয়ে গিয়েছে ক্ষীরাই নদী আর তার পাড় জুড়ে বিঘের পর বিঘে জমিতে চাষ হয়েছে রংবেঙের ফুল। আর তাই এর নাম ক্ষিরাই।
এই ক্ষিরাই অবস্থিত, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়। এটি পাশকুড়ার কাছে অবস্থিত একটি গ্রাম।
ক্ষিরাই কীভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে বালিচক, মেদনীপুর, খড়গপুর লোকাল ধরে ট্রেনে করে ক্ষীরাই পৌঁছানো যায়। গন্তব্যে পৌঁছতে সময় লাগবে ২-২.৫ ঘণ্টা।
পাঁশকুড়ার পরের স্টেশনই ক্ষীরাই। আবার যদি পাঁশকুড়া স্টেশনে নামেন, তাহলে ওখানে থেকে টোটো নিয়েও ক্ষীরাই আসতে পারেন।
কিংবা এখন তো ইন্টারনেটের যুগ, ক্ষিরাই এ নেমে গুগুল ম্যাপ ধরে ছোট্টো ছোট্টো কিংবা বড় বড় পায়ে চলে আসতে পারেন ফুলের উপত্যকায়।
ক্ষিরাই আসার উপযুক্ত সময়
এখানে আসার উপযুক্ত সময় হল শীতকাল। জমিয়ে পড়েছে শীত, একটু বাইরে ঘোরার ইচ্ছে যাচ্ছে, তাহলে অবশ্যই চলে আসুন ক্ষীরাই এ। সব থেকে ভালো যদি ভোর ৬ টার আগে পৌঁছাতে পারেন।
ভোরের ক্ষীরাই কিন্তু অপরূপ। আর ভোর না হলে এখানে আসবেন গোধুলী বেলায়। সূর্য অস্তগামী, আকাশে হালকা আলোর ছটা, আর চারিদিকে ফুলের রাজ্য।
এসব দেখে আপনার জীবনানন্দকে মনে পড়বে, ‘বাংলার মুখ দেখিয়াছি আমি , পৃথিবীর রূপ খুঁজিতে যায় না আর’।
ক্ষীরাই এর আকর্ষনীয় দেখার জিনিস কী
এই ফুলের উপত্যকায় একসঙ্গে বিভিন্ন রঙের গাঁদা, মোরগঝুঁটি, আষ্টার, চন্দ্রমল্লিকা সহ নাম না জানা অনেক রকম ফুলের সমাবেশ দেখতে পাবেন।
কাঁসাই ও ক্ষীরাই নদী কিছুটা দূরত্বে সমান্তরাল বয়ে চলেছে। আর এই দুই নদীর মধ্যবর্তী উপত্যকায় এইসব ফুলের রাজত্ব।
এই ফুলের টানেই চলে আসে প্রচুর প্রজাপতি, মৌমাছি সহ নানান পোকামাকড়। প্রকৃতি যেন এখানে উপচে পড়ছে।
কাশ্মীরের টিউলিপ গার্ডেন বা সিকিমের অর্কিড গার্ডেনের থেকে কোনও অংশে কম নয় ক্ষীরাইয়ের এই ফুলের উপত্যকা।
ক্ষীরাই নিয়ে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য
এখানে থাকা বা খাবার সুবাবস্থা নেই. তাই ব্যাগ এ করে শুকনো খাবার রাখাই শ্রেয়। তবে ক্ষিরাই স্টেশন এ খাবার দোকান পাবেন, ওখানে খেয়ে নিতে পারেন।
তাহলে আর দেরী কেন শীঘ্রই চলে আসুন এই শীতে।
এরকম আরো ভ্রমণের আর্টিকেল পড়ুন
- গড় পঞ্চকোট (পুরুলিয়া) – কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন জেনে নিন
- বড়ন্তি (পুরুলিয়া) পশ্চিমবঙ্গ – রিসোর্ট, ঘুরে আসার সেরা সময়
- হাওড়া জেলার ৮টি দর্শনীয় স্থান – পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ
- অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে ঘুরে দেখার ৭টি সেরা পর্যটন কেন্দ্র
- বেনারস শহরের ৭টি হিন্দু ধর্মীয় স্থান যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন
- কলকাতার ৪টি বিখ্যাত হেরিটেজ ক্যাফে যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন