দার্জিলিং একটি জনপ্রিয় পাহারী শহর এবং একটি টুরিস্ট ডেস্টিনেশন। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয় সম্পূর্ণ ভারত থেকে মানুষ এই স্থানের মুগ্ধতা উপভোগ করার জন্য ঘুরতে যায়।
শুধু পর্বতমালায় নয় দার্জিলিঙে আরো একটি জনপ্রিয় জিনিস হচ্ছে স্ট্রীট ফুড।
আপনারা সকলেই জানেন দার্জিলিং বিখ্যাত দার্জিলিংয়ের চা এর জন্য, কিন্তু অনেক স্ট্রিটফুড আছে দার্জিলিং এ গিয়ে আপনি ট্রাই করতে পারেন যা অসাধারণ লাগবে।
এখানে ছটি জিভে জল আনা স্ট্রিটফুড দেওয়া রইলো যা দার্জিলিংয়ের অবশ্যই ট্রাই করবেন।
এগুলি হল,
তাহলে চলুন এই স্ট্রিট ফুড গুলির সমন্ধে জানা যাক…
১. মোমো
চিকেন মোমো দার্জিলিংয়ের স্ট্রিটফুড হিসাবে একটি অতি জনপ্রিয় এবং সুস্বাদু খাবার। বলতে গেলে সমস্ত ছোট এবং বড় দার্জিলিংয়ের রেস্তোরাঁয় তিব্বতীয় খাবার হিসেবে মোমো পাওয়া যায়।
অনেক রকম এর মোমো পাওয়া যায় যেমন ভাপানো, অর্থাৎ স্টিমড্, ভাজা (ফ্রইড) যা সাধারণত গরম স্যুপ এর সাথে পরিবেশন করা হয় আপনি ৬ থেকে ৮ পিস মোমো পাবেন একটি প্লেটে যার দাম ৫০/- টাকা।
এক রেস্টুরেন্ট থেকে অন্য রেস্টুরেন্ট এর দাম একটু আলাদা হতে পারে। দার্জিলিংয়ের থাকতে আমি প্রায় রোজই মোমো খেতাম।
মোমো আসলে হল ময়দার একটি পুর ভরা খাবার । সেই পুরের এর মধ্যে থাকে সবজি ও মাংস থাকে যাকে। ভেজ মোমতে সাধারণত বাঁধাকপি, চিজ এবং অন্যান্য সবজি থাকে এবং ননভেজ গুলো সাধারণত চিকেন দিয়ে তৈরি হয়।
দার্জিলিং এ মোমো খাওয়ার সেরা জায়গা:
দার্জিলিং মল এর পাশেই চিকেন মোমো পাবেন অথবা স্থানীয় বাজারে। গান্ধী রোডে কোন রেস্টুরেন্টে আপনি ভালো মোমো পেতে পারেন।
২. থুকপা
থুকপা আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হল যা তিব্বতীয় খাবার হিসেবে জনপ্রিয়।
এটি হলো গরম নুডুলস সুপ্ যার মধ্যে সবজি, ব্রেড ক্রাম্ব, ডিম, মাংস ইত্যাদি থাকে, যদিও এটা স্টার্টআর হিসেবে বলা হয় কিন্তু এটি বেশ পেট ভরা খাবার।
দার্জিলিং এ থুকপা খাওয়ার সেরা জায়গা:
থুকপা ভালো পাওয়া যাবে দেভেকাস এবং কুঙ্গা রেস্তোরাঁ তে। দার্জিলিং গেলে অবশ্যই এই রেস্তোরাঁ গুলোতে ঠুকপা ট্রাই করবেন।
৩. শা ফালে
শা ফালে বা শাবালে বলেও জানা হয় একটি জনপ্রিয় খাবার যা সাধারণত পাউরুটি দিয়ে তৈরি হয় যার মধ্যে মাংস বা বাঁধাকপির পুর ভরা থাকে।
তারপর সেগুলো কে গোল ও অর্ধচন্দ্রাকার আকারে কেটে প্যান ফ্রাইড অথবা ডিপ ফ্রাইড করা হয়। সাধারণত চাটনি অথবা ভাজা বার্লি এবং চিজ দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
দার্জিলিং এ শা ফালে খাওয়ার সেরা জায়গা:
আপনি যেকোনো রেস্তোরাঁ তে শা ফালে দার্জিলিঙে খেতে পারবেন।
৪. সেকুয়া
দার্জিলিং এর ট্যুর করার সময় আমি শেকুয়া নামে আরেকটি বিখ্যাত স্ট্রীট খাবার খেয়েছিলাম। এগুলো মোটামুটি কাবাব বলা যায় যা নেপালিদের ধাঁচে তৈরি হয়।
বানানোর জন্য কাঁচা মাংস বিভিন্ন প্রাকৃতিক মসলা এবং হার্ব দিয়ে মেশানো হয় এবং সেগুলো কে কাঠের চুলায় রোস্ট করা হয়।
তারপর সেগুলিকে আদা কুচি, পেঁয়াজ এবং ধনেপাতা এবং লেবুর রস মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।
দার্জিলিং এ সেকুয়া খাওয়ার সেরা জায়গা:
আপনি যেকোন স্থানীয় বাজারে দার্জিলিং মেল এর পাশে দার্জিলিংয়ের এই বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড ট্রাই করতে পারেন যে খেতে অসাধারণ।
৫. ছুরপি
দার্জিলিং এর একটি বিখ্যাত দগ্ধ বিশেষ খাবার ছুপরী খেতেও সুস্বাদু। এটি অনেকটা চিজ এর মত খেতে এবং নরম ও শক্ত দুইভাবে আসে।
এটি একটি খুব পুষ্টিকর স্ন্যাক এবং একটু অন্যরকম স্বাদের জন্য এটা অবশ্যই ট্রাই করবেন। আপনি ছুপরী অ্যামাজনে কিনতে পারেন।
দার্জিলিং এ ছুপরী খাওয়ার সেরা জায়গা:
আপনি ছুপরী সমস্ত রেস্তোরাঁতেই পাবেন দার্জিলিংয়ের কারণ দার্জিলিং এর একটি অভিনব খাবার ছুপরী।
৬. নুডুলস
বিশ্বের সবাই নুডুলস খেতে ভীষণ পরিচিত এবং এই খাবার অনেক ভাবে বানানো যায়। যা খেতে সুস্বাদু হয়।
নুডুলস ঘরোয়া পদ্ধতিতে বানানো যায় আবার স্ট্রিটফুড হিসেবেও খাওয়া যায়। তবে দার্জিলিংয়ের নুডুলস অন্যতম।
তাই আপনি যদি দার্জিলিং জান তাহলে স্থানীয় রেস্তোরাঁগুলো বা রাস্তার ধারে স্টল গুলিতে অবশ্যই নুডুলস ট্রাই করবেন।
হরেক রকমের নুডুলস রেসিপি পাবেন যেখানে হককা নুডুলস থেকে শুরু করে অন্যান্য মোটা ও সরু নুডুলস পাবেন।
সবজি গাজর বাঁধাকপি দিয়ে তৈরি করা হয় এই খাবার জা খেতেও সুস্বাদু হয়। দার্জিলিং এ ভেজ নুডুলস তৈরি হয় বাঁধাকপি ও গাজর দিয়ে, ননভেজ নুডুলস চিকেন ও পর্ক দিয়ে বানানো হয়।
দার্জিলিং এ নুডলস খাওয়ার সেরা জায়গা:
তবে আমি বলব আপনারা নুডুলস একটু মার্কেট এরিয়া থেকে অর্থাৎ স্টলগুলো থেকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন কারণ তা খেতেও খুব সুস্বাদু এবং তার দাম ও অনেক কম হবে।
এই নিয়ে আমাদের দার্জিলিংয়ের স্ট্রিটফুড তালিকা শেষ হলো।
স্ট্রিটফুড দিয়ে আমরা অনেক মানুষকে স্থানীয়ভাবে, সংস্কৃতি ভাবে জানার সুযোগ পাই এবং সেই জায়গার সৌন্দর্য অনুভব করতে পারি।
তাহলে আর দেরি কেন একটি ছুটি দেখে জলদি বেরিয়ে পড়ুন পাহাড়ী শহরের উদ্দেশ্যে এবং বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড গুলো ট্রাই করুন।
পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কিছু ওয়েব স্টোরি (Web Stories):
এরকম আরো ভ্রমণের আর্টিকেল পড়ুন
- গড় পঞ্চকোট (পুরুলিয়া) – কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন জেনে নিন
- বড়ন্তি (পুরুলিয়া) পশ্চিমবঙ্গ – রিসোর্ট, ঘুরে আসার সেরা সময়
- হাওড়া জেলার ৮টি দর্শনীয় স্থান – পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ
- অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে ঘুরে দেখার ৭টি সেরা পর্যটন কেন্দ্র
- বেনারস শহরের ৭টি হিন্দু ধর্মীয় স্থান যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন
- কলকাতার ৪টি বিখ্যাত হেরিটেজ ক্যাফে যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন