কলকাতা এই শহরটাকে “সিটি অফ জয়” বলা হলেও শহরের মধ্যে প্রাণবন্ত, প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া, প্রাণখোলা আবেগের জায়গা অতি স্বল্প!
মনে হতেই পারে কেন আমি এই কথা বললাম, ভালো করে দেখলেই বুঝতে পারবেন কলকাতার পুজো পার্বণ, অনুষ্ঠান , সংস্কৃতি হেরিটেজ, রাজবাড়ি ও আরো অনেক অনেক এমনি হাজারটি গুন বোনা থাকলেও শুদ্ধ বাতাস প্রকৃতির সবুজ, পাখিদের ডাক, সোনালী রং, সমুদ্র সৈকত এইসব তাক লাগানো সৌন্দর্য দৃশ্য খুব একটা চোখে পড়বে না।
গঙ্গা নদীর মত বৃহৎ নদী নজর কারলেও সমুদ্র সৈকতের বালি, সামুদ্রিক হাওয়া, সি ফুড এর মত আনন্দদায়ক জিনিস কি খুজে পাবেন একটি পারফেক্ট উইকএন্ড এর জন্য?
না! হয়তো এই সব দৃশ্যমান কিছুই হবেনা কলকাতা শহরে , তবে কলকাতার নিকটে কিছু বিখ্যাত সমুদ্র সৈকত আছে যেখানে আপনি গিয়ে আপনার মনে আনন্দ ফিরিয়ে আনতে পারবেন।
সপ্তাহের শেষে ছুটি কাটানোর জন্য এই সমুদ্রতট গুলি একদম উপযোগ্য এবং এই সুন্দর সোনালী সি বীচ কলকাতা থেকে মাত্র ২০০ কিলোমিটার দূরত্বে আছে।
পশ্চিমবাংলার দক্ষিণ ভাগে বঙ্গোপসাগরের নাম সবাই শুনে থাকবেন। পশ্চিমবঙ্গের ভিতরে কিছু বিখ্যাত সমুদ্রতট এর নাম নিচে দেওয়া রইল
চলুন এই সমুদ্র সৈকত গুলি বিস্তারিত ভাবে দেখে নেওয়া যাক…
১. দীঘা সমুদ্র সৈকত
দীঘা সমুদ্র সৈকত অত্যন্ত পুরনো একটি টুরিস্ট ডেস্টিনেশন। কলকাতা থেকে চার ঘন্টা দূরত্ব দিঘা সি বীচ এবং পাথর ও বোল্ডার এর সমুদ্রসৈকতে বসে থাকতে বেশ ভালই লাগে।
এছাড়াও সারি সারি মেঘেদের দল জায়গাটি সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দেয়। কলকাতা ছাড়া পশ্চিমবঙ্গেও থাকা অনেক মানুষ আছে যারা সর্বপ্রথম দিঘা সি বীচ তাদের ছুটি কাটানো আদর্শ জায়গা বলে মনে করেন।
এছাড়াও রোমান্টিক ডেটে কাপেলরা দীঘা যেতে পছন্দ করে।
কলকাতা থেকে ট্রেন, বাস করে দীঘায় যাওয়া যায় এবং সমুদ্রের সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় দৃশ্যও খুব সুন্দর।
দীঘা থেকে কলকাতার দূরত্ব ১৮২ কিলোমিটার।
২. মন্দারমনি সমুদ্র সৈকত
মন্দারমনি সমুদ্র সৈকতের ভ্রমণের বোটিং এর অভিজ্ঞতা কিন্তু আপনার স্মৃতিতে চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
এটি একটি রিসোর্ট ভিলেজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলায়।
দীঘা সমুদ্র সৈকতের কলকাতার কাছাকাছি অবস্থিত এমন একটি সি বীচ যেখানে সেই মানুষেরা যেতে পারেন যারা খুব একটা ভিড়ভাট্টা পছন্দ করে না।
কাজের ক্লান্তি কাটাতে মন্দারমনি অবশ্যই যাবেন এবং একটি নিদারুণ ছুটি কাটিয়ে আসবেন। কলকাতার কাছাকাছি সমুদ্র সৈকতের প্ল্যান করলে সবচেয়ে ভালো এই সি বীচ।
১৩ কিলোমিটার লম্বা সমুদ্র সৈকতে আপনার সাথে বন্ধু বান্ধব বা সাথী কে নিয়ে লংড্রাইভে ঘুরে আসতে পারেন।
কলকাতা থেকে মন্দারমনি দুরত্ব ১৮২ কিলোিটার।
৩. তাজপুর সমুদ্র সৈকত
সমুদ্র সৈকত মানেই অনেকেই যারা ভোজন রসিক হয় সামুদ্রিক মাছ খাওয়ার জন্য অপেক্ষা করে থাকে।
শুধু তাই নয় লাল কাঁকড়া ফ্রাই, কাঁকড়ার কারি এই সমস্ত খাওয়ার জন্যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে।
তেমনি তাজপুর এর সি বীচ এ লাল কাঁকড়া ভীষণ রকম পাওয়া যায়। শুধু তাই নয় এই সমুদ্র সৈকত এ তেতুঁল গাছ ও দেখা যায়।
তাজপুর থেকে কলকাতার দূরত্ব ১৬৪ কিলোমিটার।
৪. শংকরপুর সমুদ্র সৈকত
নিউ দীঘা সমুদ্র সৈকত থেকে শংকরপুর সমুদ্র সৈকত কন্টাই রোড দিয়ে গেলে ১৪ কিলোমিটার দূরত্ব।
দীঘা থেকে আপনি একেবারেই এই সমুদ্র সৈকত ঘুরে আসতে পারেন। আপনার যদি নিজের গাড়ি থাকে তাহলে আপনি সেই গাড়ি করে গিয়েও সেই খানে পার্কিং করে শংকরপুর সমুদ্র ঘুরতে পারেন।
এছাড়াও আপনি একটি অটো ভাড়া করতে পারেন আপনার দীঘার হোটেল থেকে।
সমুদ্র সৈকতে ক্যাসুরিয়ান গাছ দিয়ে ঘিরে আছে।
স্থানীয় মাছ ধরার নৌকা এই সি বীচ এ দেখা যায়। শংকরপুর থেকে কলকাতার দূরত্ব ১৬০ কিলোমিটার।
৫. বকখালি সমুদ্র সৈকত
বকখালি সমুদ্র সৈকত সমুদ্র সৈকত একটি ছোট্ট গ্রাম বদ্বীপ এর মাঝে অবস্থিত কলকাতার দক্ষিণ ভাগে। বকখালি সমুদ্র সৈকত থেকে আপনারা সুন্দরবন খুব সহজেই ঘুরে আসতে পারবেন।
কলকাতা থেকে বকখালি দূরত্ব ১৪০ কিলোমিটার।
এই নিয়ে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের বিখ্যাত কিছু সমুদ্রসৈকতে তালিকা শেষ হলো।
কাজ থেকে অবসর পেলেই দু দিনের ছুটি নিয়ে ঘুরে আসুন প্রাণ খোলা এই সব সমুদ্রসৈকতে।
পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কিছু ওয়েব স্টোরি (Web Stories):
এরকম আরো ভ্রমণের আর্টিকেল পড়ুন
- গড় পঞ্চকোট (পুরুলিয়া) – কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন জেনে নিন
- বড়ন্তি (পুরুলিয়া) পশ্চিমবঙ্গ – রিসোর্ট, ঘুরে আসার সেরা সময়
- হাওড়া জেলার ৮টি দর্শনীয় স্থান – পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ
- অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে ঘুরে দেখার ৭টি সেরা পর্যটন কেন্দ্র
- বেনারস শহরের ৭টি হিন্দু ধর্মীয় স্থান যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন
- কলকাতার ৪টি বিখ্যাত হেরিটেজ ক্যাফে যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন