এক ক্লান্তি ভরা সপ্তাহের পর কলকাতার কাছে বন্ধুবান্ধব বা পরিবারের সাথে কিছুদিনের ছুটি কাটানো হলে মেজাজ বেশ ফুরফুরে থাকে।
দুই দিনের ও এক রাতের সফরের জন্য অনেক মানুষ সারা সপ্তাহ অপেক্ষা করে থাকে। ক্লান্তিকর এবং ব্যস্ত সময়সূচী এবং আমাদের জীবনের দৈনন্দিন ব্যস্ততা প্রকৃতি এবং আমাদের মধ্যে ব্যবধান বাড়িয়ে দিয়েছে।
শুধু তাই নয়, ক্রমবর্ধমান কাজের চাপের সাথে আমাদের বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারের সাথে আমাদের সম্পর্ককে পুষ্ট করার জন্য আমাদের কাছে কম সময় থাকে। একটি ভাল গন্তব্যে তথা একটি নিখুঁত সপ্তাহান্তে ভ্রমণ এই ব্যবধান পূরণ করতে সাহায্য করে এবং শান্তি প্রদান করে।।
উইকএন্ড হলো এমন একটা সুবর্ণ সুযোগ যেখানে আমরা শহুরে গণ্ডি পেরিয়ে চলে যেতে পারি নিরিবিলি কোনো জায়গায়। শরীর ও মন দুই বেশ আরামদায়ক সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে চায়। সপ্তাহান্তে আমাদের জীবনে কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত যোগ করতে জেনে রাখতে হবে কয়েকটি বিশেষ জায়গা।
এই নিবন্ধে, আপনি কলকাতা থেকে নিম্নলিখিত সপ্তাহান্তে যাওয়ার স্থানগুলি সম্পর্কে জানতে পারবেন,
- দীঘা
- মন্দারমণি
- টাকি
- শান্তিনিকেতন
- বিষ্ণুপুর
- জয়রামবাটি এবং কামারপুকুর
- মৌসুনি দ্বীপ
- গড়পঞ্চকোট
- অযোধ্যা পাহাড়
- মায়াপুর
- বাগদা সমুদ্র সৈকত
তাহলে চলুন এই গন্তব্যগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত ভাবে দেখে নেওয়া যাক।
১. দীঘা
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১৮২ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | জুলাই থেকে মার্চ |
কলকাতার কাছে জনপ্রিয় উইকএন্ড গন্তব্যের কথা শুনলেই, আমাদের মাথায় প্রথম যেটা আসে সেটা হলো “চল দুদিন দীঘা ঘুরে আসি।” তাই দীঘাকে অনেকেই বাংলার গোয়া বলে।
দীঘা পশ্চিমবঙ্গের একটি সমুদ্রতীরবর্তী শহর। এটি পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় অবস্থিত। এটি তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় যারা সপ্তাহান্তে তাদের বন্ধুদের সাথে কোথাও ঘুরতে যেতে চান।
এই জায়গাটি কলকাতা থেকে প্রায় ৪ ঘন্টা ড্রাইভ করে যেতে পারেন, এবং তাই, কলকাতার কাছাকাছি দেখার জন্য এটি সেরা জায়গাগুলির মধ্যে একটি। কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অংশ থেকে দীঘা যাওয়ার ট্রেন এবং বাসও পাওয়া যায়। এটি পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় হানিমুন গন্তব্য হিসেবেও বিবেচিত হয়।
তাজপুর সৈকত এবং তালসারি সৈকতের মতো অন্যান্য সমুদ্র সৈকত দীঘা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে।
২. মন্দারমণি
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১৬০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | জুলাই থেকে মার্চ |
মন্দারমণি সমুদ্র সৈকতটি ভারতের দীর্ঘতম সৈকতগুলির মধ্যে একটি।
আপনারা যদি একটু শান্ত বা নিরিবিলি সমুদ্র সৈকতের সন্ধান করেন, তাহোলে দীঘা থেকে মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মন্দারমণি একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
মন্দারমণিতে অনেকগুলি রিসর্ট রয়েছে যেখানে আপনি আপনার প্রিয়জনের সাথে কিছু মানসম্পন্ন সময় কাটাতে পারেন, বিশেষ করে সপ্তাহান্তে। এটি কলকাতার কাছাকাছি অবস্থিত সমুদ্র সৈকত গুলির মধ্যে অন্যতম।
৩. টাকি
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৬৮ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অক্টোবর থেকে মার্চ |
টাকি হল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে অবস্থিত আরেকটি সুন্দর ও জনপ্রিয় সপ্তাহান্তের গন্তব্য। এই শহরটি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ইছামতি নদীর তীরে অবস্থিত। এটি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণা জেলার অধীনে পড়ে।
এখানে আপনি ইছামতি নদীতে নৌকায় চড়ে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের বেশ কাছাকাছি যেতে পারেন, এবং দুটি বাংলার সৌন্দর্য একসাথে উপভোগ করতে পারবেন যা আপনাকে একটি অনন্য অনুভূতি দেবে। এছাড়াও, আপনি এখানে জোড়া মন্দির এবং জমিদার বাড়ির মতো ঐতিহাসিক স্থানের ইতিহাস অন্বেষণ করতে পারেন।
এখানে গোলপাতা এবং সুন্দরী গাছের বন রয়েছে যেখানের সরু পথ দিয়ে বনের অনেকটা গভীরে যেতে পারবেন। এই বনটি মিনি-সুন্দরবন নামেও পরিচিত।
এই জায়গাটি কলকাতা থেকে প্রায় ২ ঘন্টা ড্রাইভ করে যাওয়া যায়। তাই এটি একটি সপ্তাহান্তে ভ্রমণের জন্য একটি উপযুক্ত গন্তব্য।
টাকি সম্মন্দে আরো জানতে, “টাকি, হাসনাবাদ – কি কি দেখবেন, কোথায় থাকবেন, পিকনিক স্পট” আর্টিকেলটি অবসসই পড়ুন।
৪. শান্তিনিকেতন ও সোনাঝুরি
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১৬০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | নভেম্বর থেকে মার্চ |
শান্তিনিকেতন হল পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বোলপুরের কাছে অবস্থিত একটি ছোট শহর। এটিকে অনেকেই “কবিগুরুর স্থান” বলেও জানেন।
এই শহরটি কলকাতা থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। শীতকালে এবং বসন্ত উৎসবের সময় কলকাতার কাছাকাছি দেখার জন্য এটি একটি অন্যতম সেরা স্থান।
শান্তিনিকেতন বিশ্ব-ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বিখ্যাত, যা বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।শহরটি তার পৌষ মেলার জন্যও বিখ্যাত, যা ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় এবং বসন্ত উৎসব, যা মার্চ মাসে অনুষ্ঠিত হয়।
এই স্থানে আপনি সোনাঝুরি হাট যেতে পারেন যা খোয়াই নদীর তীরে স্থানীয় কারিগরদের দ্বারা আয়োজিত একটি ছোট মেলা।
৫. বিষ্ণুপুর
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১৪০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অক্টোবর থেকে মার্চ |
বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত, বিষ্ণুপুর পশ্চিমবঙ্গের আরেকটি সপ্তাহান্তের গন্তব্য।
পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম জনপ্রিয় শহর বিষ্ণুপুর একসময় মল্লভূম রাজ্যের রাজধানী ছিল। এটি “টেরাকোটা মন্দিরের শহর” নামে পরিচিত। মল্ল রাজবংশ ছিল বাংলার একটি গুরুত্বপূর্ণ হিন্দু রাজবংশ।
এই মন্দিরগুলি, যা প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটকদের আকর্ষণ করে, মল্ল রাজা দ্বারা নির্মিত এবং তাদের প্রধান হিন্দু দেবতা রাধা-কৃষ্ণকে উত্সর্গ করা।
আপনি এর সমৃদ্ধ ঐতিহ্য অন্বেষণ করতে এবং অতীতের
আভাস পেতে এই শহরে যেতে পারেন। শহরটি তার বিখ্যাত বালুচরী শাড়ি এবং পোড়ামাটির কাজের জন্যও বেশ জনপ্রিয়।
৬. জয়রামবাটি এবং কামারপুকুর
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১১০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অক্টোবর থেকে মার্চ |
জয়রামবাটি এবং কামারপুকুর যথাক্রমে সারদা দেবী এবং শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণের জন্মস্থান। এই স্থানগুলিকে অতি পবিত্র বলে মনে করা হয় এবং প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ ভক্তরা রামকৃষ্ণদেব ও সারদামনির দর্শন পেতে এখানে আসেন।
জয়রামবাটি গ্রামটি বাঁকুড়া জেলায় অবস্থিত, ও কামারপুকুর পুরুলিয়া জেলায় অবস্থিত।
এই উভয় স্থান একে অপরের কাছাকাছি অবস্থিত এবং কলকাতা থেকে সপ্তাহান্তে ভ্রমণের জন্য উপযুক্ত।
৭. মৌসুনি দ্বীপ
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১১০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | জুলাই থেকে মার্চ |
কলকাতার কাছে সপ্তাহান্তের গন্তব্যের তালিকায় তুলনামূলকভাবে নতুন সংযোজন হল মৌসুনি দ্বীপ। এই দ্বীপটি কলকাতার খুব কাছে অবস্থিত এবং সপ্তাহান্তে ছুটি কাটানোর জন্য এটি একটি উপযুক্ত স্থান।
আপনি এখানে বালুকাময় সৈকত, সবুজ নারকেল গাছের সারি, ঘন ঝোপঝাড় এবং বিস্তীর্ণ নীল আকাশ দেখার সুযোগ পাবেন। আরামদায়ক দড়ির হ্যামকের উপর শুয়ে শান্ত জল রাশির সাথে এক অনন্য সংযোগ খুঁজে পাবেন।
ভোরের সুন্দর সূর্যোদয় এবং আকাশের কমলা-লাল রঙের সাথে সূর্যাস্ত আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করবে।
মৌসুনি দ্বীপ সম্পর্কে আরো জানতে “মৌসুনি দ্বীপ” আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়ুন।
৮. গড়পঞ্চকোট
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ২৫০ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অগাস্ট থেকে মার্চ |
গড়পঞ্চকোট পুরুলিয়ার পঞ্চকোট পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত এবং এটি বাংলার অন্যতম প্রিয় সাপ্তাহিক ছুটির গন্তব্যর মধ্যে একটি।
এই জায়গাটি সবুজ উপত্যকা, ঘন বন এবং মনোরম আবহাওয়ার ভান্ডার রয়েছে। এই অঞ্চলে উপত্যকার সৌন্দর্য ফুটে ওঠে নীল বা ঘনও কালো মেঘে আচ্ছন্ন আকাশের পটভূমিতে যা নিঃসন্দেহে একটি মন মাতানো দৃশ্য।
গড়পঞ্চকোট জায়গাটি তার চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্যের কারণে একটি নিখুঁত ছুটির পরিবেশ প্রদান করে। সারি সারি সেগুন, সাল, পলাশ এবং মেহগনিগাছ এই জায়গাটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
তাই সপ্তাহান্তে ছুটি কাটানোর জন্য ও শহরতলীর ব্যস্ততা থেকে অনেকটা স্বস্তি পেতে এই জায়গাটি একটি চমৎকার বিকল্প হতে পারে।
গড়পঞ্চকোট রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ আজ শুধুমাত্র দক্ষিণ পঞ্চকোট পাহাড়ের পাদদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে পোড়ামাটির মন্দির হিসাবে। মন্দিরগুলির অনন্য স্থাপত্যশৈলী রয়েছে যা পঞ্চ রত্ন, জোড়-বাংলা এবং পিরহা’র বিস্ময়কর স্থাপত্যের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
তাই এখানকার মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ, মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা, অরণ্য এবং পাহাড় আপনার আত্মাকে পুনরুজ্জীবিত করবেই।
৯. অযোধ্যা পাহাড়
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ৩৩৪ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অগাস্ট থেকে মার্চ |
অযোধ্যা পাহাড়, যা ৭০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত, পুরুলিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় এবং বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়গুলি দলমা পর্বতশ্রেণীর অংশ এবং এটি কলকাতার কাছে ভ্রমণকারীদের জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল।
অনেকে বিশ্বাস করেন যে স্থানটির পৌরাণিক গুরুত্ব রয়েছে কারণ ভগবান রাম এবং সীতা তাদের নির্বাসনের সময় এখানে বসবাস করেছিলেন বলে কথিত আছে। তাই এই জায়গাটি আপনাকে দেবত্ব এবং সৌন্দর্যের উষ্ণ পরিবেশে অভ্যর্থনা জানাবে।
এই পাহাড়ের চূড়া থেকে মনোরম দৃশ্য আপনার হৃদয়ে চিরকাল এক অনন্য স্মৃতি হয়ে রয়ে যাবে। উপত্যকার চূড়াগুলো অনেকটা টেবিলল্যান্ডের মতো যা পাহাড়তলী কে আরও আকর্ষণীয় করে তোলে।
অযোধ্যা পাহাড় চারপাশে ঘন উদ্ভিদ দ্বারা বেষ্টিত। এই পাহাড় থেকে নির্মল ও স্নিগ্ধ প্রবাহিত কুমারী, কংসাবতী এবং সুবর্ণরেখা নদীর দৃশ্য দেখা যায়।
সূর্যোদয়ের ঠিক আগে এই স্থান দেখার সেরা সময়। আপনি যদি অযোধ্যা পাহাড়ের চূড়ায় আরোহণ করেন তবে আপনি সুন্দর পাহাড় এবং একটি পরিষ্কার নীল আকাশের পটভূমিতে সূর্যোদয়ের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য দেখার একটি দুর্দান্ত সুযোগ পাবেন।
অনেক অভিযাত্রী তাদের রক-ক্লাইম্বিং ক্ষমতাকে আরো ভালো করতে অযোধ্যা পাহাড়ে ভ্রমণ করেন।
১০. মায়াপুর
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ১২৯ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | জানুয়ারী থেকে ডিসেম্বর |
আপনি যদি আপনার সপ্তাহান্তে একটি শান্তিপূর্ণ এবং আধ্যাত্মিক পরিবেশে কাটাতে চান তবে মায়াপুর ভ্রমণ আপনার জন্য একটি দুর্দান্ত বিকল্প।
মায়াপুর ইসকন হল পশ্চিমবঙ্গ এবং সমগ্র ভারতে পবিত্রতম স্থানগুলির মধ্যে একটি। এটি একটি সুপরিচিত বৈষ্ণব তীর্থস্থান যা বিশেষভাবে শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুকে উৎসর্গ করা, যিনি ভগবান কৃষ্ণের অবতার হিসাবে পরিচিত। ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি মায়াপুরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে জানা যায়।
এটি চন্দ্রোদয় মন্দির, প্রভুপাদের সমাধি এবং শ্রীচৈতন্যমঠের জন্যও বিখ্যাত।
ভক্তরা মায়াপুরের প্রধান আকর্ষণ চন্দ্রদোয়া মন্দির দেখতে আসেন। এই মন্দিরের প্রধান আকর্ষণ হল গোপিদের সাথে অপূর্ব ও মনোমুগ্ধকর রাধাকৃষ্ণের মূর্তি। মূর্তিটি ভগবান নৃসিংহ দেবের ও তা ফুল দিয়ে সুসজ্জিত একটি মঞ্চে স্থাপন করা হয়েছে।
আপনি আপনার উইকএন্ডটি এই বিশাল মন্দির চত্বর ঘুরে বেড়াতে, মহাপ্রসাদ উপভোগ করতে এবং মঙ্গল আরতির আভাস পেতে কাটাতে পারেন।
মায়াপুর সুম্মন্দে আরো জানতে “মায়াপুরের ইসকন মন্দির” আর্টিকেলটি অবশ্যই পড়ুন।
১১. বাগদা সমুদ্র সৈকত
কলকাতা থেকে দূরত্ব | ২৪৫ কিলোমিটার |
ঘুরতে যাওয়ার সেরা সময় | অক্টোবর থেকে মার্চ |
বাগদা সমুদ্র সৈকত কলকাতা থেকে যাওয়ার জন্য একটি সুন্দর গন্তব্যস্থল। এটি দুবলাগাদিতে অবস্থিত যা বালাসোর থেকে ৩৪ কিমি দূরে। উড়িষ্যার বিচিত্র এবং নির্জন সৈকতগুলির মধ্যে এটি অন্যতম।
শান্তিপূর্ণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য বাগদা একটি নিখুঁত সপ্তাহান্তে ছুটির গন্তব্য। কলকাতা থেকে ২৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই সৈকতটি প্রকৃতির এক মধুর নিস্তব্ধতাপূর্ণ রূপ অনুভব করার জন্য একটি আদর্শ জায়গা। দীর্ঘ উপকূলরেখা ঘেঁষে ঘন ঝাউ বন (তামারিক্স গাছ) এর মনোরম দৃশ্য চোখে পড়ার মতো।
একটি ক্লান্তি ভরা সপ্তাহের পর, এই সৈকতের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে পারেন। এখানে আপনি সকালের সোনালী সূর্যদয়, ও বালুকাময় সৈকতে বা হ্যামকের উপর একটি শান্তিপূর্ণ জীবন উপভোগ করতে পারেন।
উপরন্তু দিগন্তে পাল তোলা জেলেদের নৌকো, হামাগুড়ি দেওয়া লাল কাঁকড়া এবং সমুদ্র সৈকতে সাদা ঢেউ, এইসব এর মাঝে সকাল আরম্ভ করুন। রাত্রে আপনি আকাশের দিকে তাকিয়ে তারাদের আলাপ আলোচনা শুনুন। এছাড়াও ঢেউয়ের শব্দ শুনতে বেশ ভালো লাগবে। অমাবস্যার রাতে, আপনি আলোকিত তরঙ্গের একটি জাদুকরী প্রভাবের সাক্ষী হতে পারেন।
এখানে ক্যাম্পফায়ার উপভোগ করা এবং এখানে মনোরম সামুদ্রিক খাবার উপভোগ করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।
এইগুলি হল কলকাতার কাছাকাছি কিছু সেরা সপ্তাহান্তের গন্তব্য যেখানে আপনি এক বা দুই দিন কাটাতে পারেন এবং আপনার বন্ধু এবং পরিবারের সাথে একটি দারুন অভিজ্ঞতা পেতে পারেন।
সুতরাং একটি নিখুঁত সপ্তাহান্তে ছুটির জন্য এই গন্তব্যগুলির যে কোনও একটিতে যান এবং আমার সাথে আপনার অভিজ্ঞতা ভাগ করতে ভুলবেন না।
এরকম আরো ভ্রমণের আর্টিকেল পড়ুন
- গড় পঞ্চকোট (পুরুলিয়া) – কোথায় থাকবেন, কি কি দেখবেন জেনে নিন
- বড়ন্তি (পুরুলিয়া) পশ্চিমবঙ্গ – রিসোর্ট, ঘুরে আসার সেরা সময়
- হাওড়া জেলার ৮টি দর্শনীয় স্থান – পশ্চিমবঙ্গ ভ্রমণ
- অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে ঘুরে দেখার ৭টি সেরা পর্যটন কেন্দ্র
- বেনারস শহরের ৭টি হিন্দু ধর্মীয় স্থান যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন
- কলকাতার ৪টি বিখ্যাত হেরিটেজ ক্যাফে যেকানে আপনি ঘুরে আস্তে পারেন